বাংলাদেশ জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ আইন, ২০১৮

( ২০১৮ সনের ৮ নং আইন )

[ ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ]

জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের সার্বিক উন্নয়ন, পরিচালনা ও বিকাশের লক্ষ্যে বিধান প্রণয়নের নিমিত্ত প্রণীত আইন

যেহেতু জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের সার্বিক উন্নয়ন, পরিচালনা ও বিকাশের লক্ষ্যে বিধান প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;

সেহেতু এতদ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল :-

প্রথম অধ্যায়

প্রারম্ভিক

সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন১। (১) এই আইন বাংলাদেশ জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ আইন, ২০১৮ নামে অভিহিত হইবে।

(২) এই আইন অবিলম্বে কার্যকর হইবে।

সংজ্ঞা২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে –

(১) ‘‘অনাপত্তি সনদ’’ অর্থ ধারা ৬ এর উপ-ধারা (২) এর অধীন বোর্ড কর্তৃক প্রদত্ত অনাপত্তি সনদ;

(২) ‘‘অনুমতি’’ অর্থ ধারা ৫ এর উপ-ধারা (১) এর অধীন সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুমতি;

(৩) ‘‘ইয়ার্ড’’ অর্থ জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ কাজে ব্যবহারের নিমিত্ত বরাদ্দকৃত জোনের কোন জমি;

(৪) ‘‘চেয়ারম্যান’’ অর্থ বোর্ডের চেয়ারম্যান;

(৫) ‘‘ছাড়পত্র’’ অর্থ ধারা ৬ এর উপ-ধারা (৫) এর অধীন বোর্ড কর্তৃক প্রদত্ত ছাড়পত্র;

(৬) ‘‘জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ’’ অর্থ জাহাজের বিভিন্ন অংশ বিভাজন এবং বিভাজিত বিভিন্ন অংশ অপসারণ ও ব্যবস্থাপনাও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;

(৭) ‘‘জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ পরিকল্পনা’’ অর্থ জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য নির্ধারিত গাইডলাইন বা বিধি অবলম্বনে প্রস্তুতকৃত পরিকল্পনা;

(৮) ‘‘জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ ফ্যাসিলিটি প্ল্যান’’ অর্থ জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ কার্যে ইয়ার্ড বা অন্যান্য সুবিধাদি ব্যবহার সংক্রান্ত প্ল্যান;

(৯) ‘‘জোন’’ অর্থ ধারা ৪ এর অধীন সরকার কর্তৃক ঘোষিত কোন জোন;

(১০) ‘‘তহবিল’’ অর্থ বোর্ডের তহবিল;

(১১) ‘‘প্রবিধান’’ অর্থ আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান;

(১২) ‘‘ফৌজদারী কার্যবিধি’’ অর্থ Code of Criminal Procedure, 1898 (Act No. V of 1898);

(১৩) ‘‘বিধি’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;

(১৪) ‘‘বোর্ড’’ অর্থ ধারা ৮ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ বোর্ড;

(১৫) ‘‘মহাপরিচালক’’ অর্থ বোর্ডের মহাপরিচালক;

(১৬) ‘‘সদস্য’’ অর্থ বোর্ডের কোন সদস্য; এবং

(১৭) ‘‘সৈকতায়ন (Beaching)’’ অর্থ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণের উদ্দেশ্যে কোন ইয়ার্ডের সমুদ্রতটে জাহাজ আনয়ন।

এই আইন অতিরিক্ত গণ্য হওয়া৩। এই আইনের বিধানাবলি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইনের কোন বিধানকে ক্ষুণ্ণ না করিয়া উহার অতিরিক্ত হিসাবে কার্যকর হইবে।

দ্বিতীয় অধ্যায়

জোন ঘোষণা, ইত্যাদি

জোন ঘোষণা৪। (১) সরকার, তদ্‌কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ কার্যক্রম নির্দিষ্ট এলাকায় সীমাবদ্ধ রাখিবার লক্ষ্যে উপযুক্ত কোন এলাকাকে জোন হিসাবে ঘোষণা ও সম্প্রসারণ করিতে পারিবে।

(২) জোন ঘোষণা ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে সরকার, ভূমি অধিগ্রহণ করিতে পারিবে এবং উহাতে ইয়ার্ড স্থাপনের জন্য বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ইজারা প্রদান করিতে পারিবে।

ইয়ার্ড স্থাপন৫। (১) কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সরকারের অনুমতি গ্রহণক্রমে কোন জোনে ইয়ার্ড স্থাপন করিতে পারিবে।

(২) জোন বহির্ভূত এলাকায় ইয়ার্ড স্থাপন বা এতদ্উদ্দেশ্যে অনুরূপ স্থাপনা নির্মাণ করা যাইবে না।

(৩) ঘোষিত জোনের মধ্যে এই আইন কার্যকর হইবার পূর্বে স্থাপিত ইয়ার্ডের জন্য সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনুমতি গ্রহণ করিতে হইবে।

(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন অনুমতি গ্রহণ করা না হইলে উক্ত ইয়ার্ডে কার্যক্রম পরিচালনা করা যাইবে না এবং উহাতে অবস্থিত সম্পত্তি বাজেয়াপ্তযোগ্য হইবে।

(৫) উপ-ধারা (১) এর অধীন ইয়ার্ড স্থাপনের অনুমতি প্রদানের শর্ত, পদ্ধতি ও ফি সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হইবে।

জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ৬। (১) কোন ইয়ার্ডে আমদানিকৃত বা স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ করা যাইবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন জাহাজ আমদানি বা স্থানীয়ভাবে সংগ্রহের পূর্বে বোর্ডের অনাপত্তি সনদ গ্রহণ করিতে হইবে।

(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন কোন জাহাজ আমদানি বা, ক্ষেত্রমত, সংগ্রহের পর বোর্ড কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মচারী সৈকতায়ন ও বিভাজনের ছাড়পত্র প্রদানের নিমিত্ত উহা পরিদর্শন করিবে।

(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন পরিদর্শনের পর কোন জাহাজ সৈকতায়ন, পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য কার্যাবলি সম্পাদন করিতে হইবে।

(৫) বোর্ডের নিকট হইতে ছাড়পত্র গ্রহণ ব্যতীত উপ-ধারা (৪) এর অধীন কোন জাহাজ সৈকতায়ন, পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ এবং আনুষঙ্গিক কার্যাবলি সম্পদন করা যাইবে না।

(৬) এই ধারার অধীন অনাপত্তি সনদ প্রদান, পরিদর্শন, সৈকতায়ন এবং জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ, ছাড়পত্র প্রদান এবং ফি সম্পর্কিত বিষয়াদি বিধি দ্বারা নির্ধারণ করা যাইবে।

(৭) সরকার এবং ইয়ার্ড মালিকগণ জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণের ক্ষেত্রে সৈকতায়নের বিকল্প হিসাবে পরিবেশবান্ধব অন্যান্য উন্নত পদ্ধতি প্রচলনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।

(৮) বোর্ড, পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য আমদানিকৃত বা সংগৃহিত জাহাজের ধরন এবং আকার অনুসারে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে জাহাজের বিভাজন বা কাটিংয়ের সময়কাল নির্দিষ্ট করিতে পারিবে।

(৯) উপ-ধারা (৮) এ উল্লিখিত বিধি দ্বারা নির্দিষ্টকৃত সময়কালের মধ্যে বিভাজন বা কাটিং সম্পন্ন করিতে ব্যর্থ হইলে সংশ্লিষ্ট ইয়ার্ডকে বিধিতে উল্লিখিত হারে জরিমানা করা যাইবে।

(১০) জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণের সহিত সংশ্লিষ্ট সকল ভেন্ডরকে বিধি দ্বারা নির্ধারিত ফি প্রদান সাপেক্ষে বোর্ডের নিকট হইতে লাইসেন্স গ্রহণ করিতে হইবে।

ব্যাখ্যা: এই উপ-ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে “ভেন্ডর” বলিতে জাহাজের বিভিন্ন সরঞ্জামাদি ইয়ার্ড হইতে ক্রয়কারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে বুঝাইবে।

আন্তর্জাতিক মান সংরক্ষণ৭। (১) বোর্ড জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ কার্যক্রম করিবার ক্ষেত্রে জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক আইন ও কনভেনশনের শর্ত প্রতিপালনের বিষয়টি নিশ্চিত করিবে।

(২) The Hong Kong International Convention for the Safe and Environmentally Sound Recycling of Ships, 2009 এর শর্ত প্রতিপালনের নিমিত্ত, এই আইন কার্যকর হইবার অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসরের মধ্যে প্রয়োজনীয় সক্ষমতা অর্জনের লক্ষ্যে সরকার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।

(৩) বোর্ড এতদুদ্দেশ্যে আন্তর্জাতিক আইন ও কনভেনশনের বিধানের আলোকে গাইডলাইন প্রস্তুত বা, সময় সময়, নির্দেশনা জারি করিতে পারিবে।

তৃতীয় অধ্যায়

বাংলাদেশ জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ বোর্ড

বোর্ড প্রতিষ্ঠা৮। (১) এই আইন কার্যকর হইবার পর সরকার, যথাশীঘ্র সম্ভব, গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বাংলাদেশ জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ বোর্ড নামে একটি বোর্ড প্রতিষ্ঠা করিবে।

(২) বোর্ড একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং ইহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সীলমোহর থাকিবে এবং এই আইনের বিধান সাপেক্ষে ইহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার এবং হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে এবং বোর্ড ইহার নিজ নামে মামলা দায়ের করিতে পারিবে এবং ইহার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যাইবে।

বোর্ডের কার্যালয়৯। (১) সরকার কর্তৃক নির্ধারিত স্থানে বোর্ডের প্রধান কার্যালয় থাকিবে ।

(২) বোর্ড প্রয়োজনে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, বাংলাদেশের যে কোন স্থানে উহার শাখা কার্যালয় স্থাপন করিতে পারিবে।

বোর্ডের গঠন

১০। (১) নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে বোর্ড গঠিত হইবে, যথাঃ-

(ক) শিল্প মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উক্ত মন্ত্রণালয়ের অন্যূন অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি, যিনি ইহার     চেয়ারম্যানও হইবেন;

(খ) শিল্প মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উক্ত মন্ত্রণালয়ের অন্যূন যুগ্ম-সচিব বা সমপদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;

(গ) পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উক্ত মন্ত্রণালয়ের অন্যূন যুগ্ম-সচিব বা সমপদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;

(ঘ) শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উক্ত মন্ত্রণালয়ের অন্যূন যুগ্ম-সচিব বা সমপদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;

(ঙ) জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ কর্তৃক মনোনীত উক্ত বিভাগের অন্যূন যুগ্ম-সচিব বা সমপদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;

(চ) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক মনোনীত উক্ত বোর্ডের অন্যূন কমিশনার পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;

(ছ) নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উক্ত মন্ত্রণালয়ের অন্যূন যুগ্ম-সচিব বা সমপদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;

(জ) বিভাগীয় কমিশনার, চট্টগ্রাম;

(ঝ) ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল, চট্টগ্রাম রেঞ্জ, বাংলাদেশ পুলিশ;

(ঞ) বাংলাদেশ নৌ-বাহিনী কর্তৃক মনোনীত উক্ত বাহিনীর একজন উপযুক্ত প্রতিনিধি;

(ট) জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের এসোসিয়েশনের সভাপতি;

(ঠ) সরকার কর্তৃক মনোনীত জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের মালিক পক্ষের দুই জন প্রতিনিধি; এবং

(ড) বোর্ডের মহাপরিচালক, যিনি ইহার সদস্য-সচিবও হইবেন।

(২) সরকার কর্তৃক উপ-বিধি (১) এর দফা (ঠ) এর অধীন মনোনীত ব্যক্তির সদস্য পদের মেয়াদ হইবে তাহার মনোনয়নের তারিখ হইতে পরবর্তী ৩(তিন) বৎসর :

তবে শর্ত থাকে যে, সরকার, প্রয়োজনে, যে কোন সময় সরকার কর্তৃক মনোনীত সদস্যের মেয়াদ শেষ হইবার পূর্বে কোন কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে তাহাকে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবে।

(৩) বোর্ড, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে, প্রয়োজনে এক বা একাধিক ব্যক্তিকে বোর্ডের সদস্য হিসাবে কো-অপ্ট করিতে পারিবে।

বোর্ডের কার্যাবলি ও ক্ষমতা১১। এই আইনের অন্যান্য বিধানাবলি সাপেক্ষে, বোর্ডের কার্যাবলি ও ক্ষমতা হইবে নিম্নরূপ, যথা :-

(ক) জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ কার্যাবলির সার্বিক তত্তাবধান;

(খ) সময়ে সময়ে ইয়ার্ডের সার্বিক কার্যক্রম পর্যালোচনা ও মূল্যায়ন;

(গ) জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ পরিকল্পনা অনুমোদন;

(ঘ) জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ ফ্যাসিলিটি প্ল্যান অনুমোদন;

(ঙ) শ্রমিকের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে এবং কর্মক্ষেত্রে ঝুঁকি নিরসনে শ্রম সংক্রান্ত আইন এবং পেট্রোলিয়াম ও বিস্ফোরক সংক্রান্ত আইনের আলোকে কার্যক্রম গ্রহণ এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, সংস্থা বা দপ্তরের সহিত সমন্বয় সাধন;

(চ) পরিবেশ সম্মত উপায়ে জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ নিশ্চিতকল্পে পরিবেশ সংক্রান্ত আইনের আলোকে কার্যক্রম গ্রহণ এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, সংস্থা বা দপ্তরের সহিত সমন্বয় সাধন;

(ছ) বাংলাদেশ কাস্টমস ও এক্সাইজ সংক্রান্ত বিদ্যমান আইনের আলোকে কার্যক্রম গ্রহণ এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, সংস্থা বা দপ্তরের সহিত সমন্বয় সাধন;

(জ) জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের বিকাশ সাধনে সরকারের নিকট সুপারিশ বা প্রস্তাব প্রেরণ এবং এই বিষয়ে সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক কার্যক্রম গ্রহণ;

(ঝ) জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প বিকাশের উদ্দেশ্যে নূতন জোন প্রতিষ্ঠা বা বিদ্যমান জোন সম্প্রসারণের বিষয়ে সরকারের নিকট সুপারিশ প্রদান;

(ঞ) জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ কার্যক্রমে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা গ্রহণ এবং এতদুদ্দেশ্যে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, দেশি-বিদেশি সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের সহিত চুক্তি সম্পাদন;

(ট) দেশিয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা, গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সহিত পারস্পরিক যোগাযোগ স্থাপন; এবং

(ঠ) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অন্যান্য ক্ষমতা প্রয়োগ ও অর্পিত অন্যান্য দায়িত্ব পালন।

সভা১২। (১) এই ধারার অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, বোর্ড উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।

(২) চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্ধারিত তারিখ স্থান ও সময়ে বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হইবে।

(৩) প্রতি ৪ (চার) মাসে বোর্ডের অন্যূন একটি সভা অনুষ্ঠিত হইবে।

(৪) চেয়ারম্যান বোর্ডের সকল সভায় সভাপতিত্ব করিবেন এবং তাহার অনুপস্থিতিতে চেয়ারম্যান কর্তৃক মনোনীত উহার একজন সদস্য সভায় সভাপতিত্ব করিবেন।

(৫) বোর্ডের প্রত্যেক সদস্যের একটি করিয়া ভোট থাকিবে এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে সভার সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে, তবে ভোটের সমতার ক্ষেত্রে সভার সভাপতিত্বকারী ব্যক্তির একটি দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদানের ক্ষমতা থাকিবে।

(৬) বোর্ডের সভায় কোরাম পূরণের জন্য উহার মোট সদস্য সংখ্যার অন্যূন এক-তৃতীয়াংশ সদস্যের উপস্থিতির প্রয়োজন হইবে, তবে মুলতবি সভার ক্ষেত্রে কোন কোরামের প্রয়োজন হইবে না।

(৭) শুধুমাত্র কোন সদস্য পদের শূন্যতা বা বোর্ড গঠনে ত্রুটি থাকিবার কারণে উহার কোন কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হইবে না বা তৎসম্পর্কে কোন প্রশ্নও উত্থাপন করা যাইবে না।

বোর্ডের মহাপরিচালক১৩। (১) সরকার একজন উপযুক্ত সরকারি কর্মচারীকে বোর্ডের মহাপরিচালক নিযুক্ত করিবে।

(২) মহাপরিচালক বোর্ডের প্রধান নির্বাহী হইবেন এবং বোর্ড কর্তৃক অর্পিত ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্যাবলি সম্পাদন করিবেন।

(৩) মহাপরিচালক তাহার এবং তাহার অধস্তন কর্মচারীর কাজের জন্য বোর্ডের নিকট দায়ী থাকিবেন।

বোর্ডের কর্মচারী১৪। (১) সরকার কর্তৃক অনুমোদিত সাংগঠনিক কাঠামো অনুযায়ী বোর্ড উহার কার্যাবলি সম্পাদনের নিমিত্ত প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে।

(২) বোর্ডের কর্মচারীদের নিয়োগ ও চাকরির শর্তাবলি প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

(৩) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, পরিবেশ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ কাস্টমস, শ্রম পরিদপ্তর, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর এবং বিস্ফোরক অধিদপ্তরের উপযুক্ত কর্মচারীকে বোর্ডে প্রেষণে নিয়োগ করিতে পারিবে।

চতুর্থ অধ্যায়

পরিদর্শন

পরিদর্শন১৫। (১) এই ধারার বিধানাবলি সাপেক্ষে, বোর্ড কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে সাধারণ বা বিশেষভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি ইয়ার্ড, আমদানিকৃত বা স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত জাহাজ এবং জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ কার্যক্রম পরিদর্শন করিতে পারিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন পরিদর্শনকালে ইয়ার্ড পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষ এবং জাহাজ আমদানীকারক প্রতিষ্ঠান ও জাহাজের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করিতে বাধ্য থাকিবে।

প্রবেশ, রেকর্ডপত্র যাচনা, জিজ্ঞাসাবাদ, ইত্যাদির ক্ষমতা১৬। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, বোর্ড কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে সাধারণ বা বিশেষভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রত্যেক কর্মচারী নিম্নবর্ণিত ক্ষমতা প্রয়োগ করিতে পারিবে, যথা:–

(ক) যেকোন ইয়ার্ড, জাহাজ বা প্রকল্প এলাকায় প্রবেশ এবং যেকোন ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ বা রেকর্ডপত্র বা তথ্য উপাত্ত যাচনা ও পর্যালোচনা করা;

(খ) উক্ত ইয়ার্ড জাহাজ বা প্রকল্প এলাকায় অবস্থিত যেকোন কিছু পরিদর্শন করা; এবং

(গ) উক্ত ইয়ার্ড, জাহাজ বা প্রকল্প এলাকায় যে কোন অনুসন্ধান বা নমুনা সংগ্রহ বা জরিপ পরিচালনা করা।

পঞ্চম অধ্যায়

পরিবেশের সুরক্ষা এবং শ্রমিকের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও নিরাপত্তা

পরিবেশের সুরক্ষা১৭। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পুরণকল্পে, জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ কার্যক্রম হইতে উৎপাদিত সকল ধরনের বর্জ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ এবং ব্যবস্থাপনার জন্য পরিবেশ সংক্রান্ত বিদ্যমান আইন ও বিধির আলোকে সরকার গাইড-লাইন বা নির্দেশাবলি জারি করিতে পারিবে।

(২) জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ কার্যক্রম হইতে উৎপাদিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার নিমিত্ত এই আইন কার্যকর হইবার অনধিক ৩ (তিন) বৎসরের মধ্যে সরকার, Treatment Storage and Disposal Facility (TSDF) নির্মাণ করিবে।

(৩) TSDF এর ব্যবহার সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য আবশ্যিক হইবে এবং সরকার, ইহার পরিচালনা ও ব্যবহার সংক্রান্ত গাইড-লাইন বা নির্দেশাবলি জারি করিতে পারিবে।

শ্রমিকের কর্ম শ্রেণি-বিন্যাস১৮। (১) সরকার, জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ কাজের ধরন অনুসারে ন্যূনতম যোগ্যতা নির্ধারণপূর্বক কর্ম শ্রেণিবিন্যাস প্রণয়ন করিতে পারিবে।

শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ ও নিয়োগ১৯। (১) বোর্ড, কর্ম শ্রেণিবিন্যাস অনুযায়ী প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জনের লক্ষ্যে বিধিতে নির্ধারিত পদ্ধতিতে উপযুক্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করিবে।

(২) শ্রমিক-কর্মচারীদের দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে, সরকার, এই আইন কার্যকর হইবার অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসরের মধ্যে, একটি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (Training Institute) প্রতিষ্ঠা করিবে।

(৩) বোর্ড, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের একটি হাল-নাগাদ ডাটা-বেইজ সংরক্ষণ করিবে এবং ইয়ার্ড মালিকগণ উক্ত ডাটাবেইজভুক্ত শ্রমিকদের মধ্য হইতে শ্রমিক নিয়োগ করিবে।

বীমা ও ক্ষতিপূরণ২০। (১) ইয়ার্ড মালিকগণ ইয়ার্ডে কর্মরত সকল শ্রমিক-কর্মচারীর নামে আবশ্যিকভাবে জীবন-বীমা করিবে।

(২) ইয়ার্ডে দুর্ঘটনার কারণে কোন শ্রমিক-কর্মচারী মৃত্যুবরণ করিলে বা গুরুতর আহত হইলে, বিধি-দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, শ্রমিক-কর্মচারীর কর্মদক্ষতা ও কর্ম শ্রেণিবিন্যাস অনুসারে বাংলাদেশ শ্রম আইনে উল্লিখিত ক্ষতিপূরণের অতিরিক্ত হিসাবে তাহার পরিবারকে বা তাহাকে ইয়ার্ড মালিকগণ ক্ষতিপূরণ প্রদান করিতে পারিবে।

ষষ্ঠ অধ্যায়

বোর্ডের প্রতিবেদন ও আর্থিক ব্যবস্থাপনা

বার্ষিক প্রতিবেদন২১। (১) বোর্ড প্রতি অর্থ বৎসরে উহার সম্পাদিত কার্যাবলির বিবরণ সংবলিত একটি বার্ষিক প্রতিবেদন অর্থ বৎসর সমাপ্ত হইবার পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে সরকারের নিকট দাখিল করিবে।

(২) সরকার, প্রয়োজনে, বোর্ডের নিকট হইতে যে কোন সময় উহার যে কোন বিষয়ের উপর বিবরণী, রিটার্ন, প্রতিবেদন ও তথ্য তলব করিতে পারিবে এবং বোর্ড উহা সরকারের নিকট সরবরাহ করিতে বাধ্য থাকিবে।

বোর্ডের তহবিল২২। (১) বোর্ডের একটি তহবিল থাকিবে এবং উহাতে নিম্নবর্ণিত অর্থ জমা হইবে, যথা:-

(ক) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত ঋণ ও অনুদান;

(খ) সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে কোন বিদেশি সরকার, সংস্থা বা আন্তর্জাতিক সংস্থা হইতে প্রাপ্ত অনুদান;

(গ) বোর্ডের সম্পত্তি বিনিয়োগ হইতে আহরিত আয়;

(ঘ) বোর্ড কর্তৃক সংগৃহীত ফি, যদি থাকে; এবং

(ঙ) সরকার কর্তৃক অনুমোদিত অন্য কোন উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ।

(২) বোর্ডের তহবিল হইতে, সরকার কর্তৃক অনুমোদিত বাজেট অনুযায়ী, সরকারি নিয়মে বোর্ডের প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহ করা হইবে।

(৩) বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত কোন তফসিলি ব্যাংকে তহবিলের অর্থ জমা রাখিতে হইবে।

(৪) তহবিলের অর্থ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত খাতে বিনিয়োগ করা যাইবে।

(৫) মহাপরিচালক এবং চেয়ারম্যান কর্তৃক মনোনীত অন্য একজন কর্মকর্তার যৌথ স্বাক্ষরে তহবিলের হিসাব পরিচালিত হইবে।

(৬) কোন অর্থ বৎসরে বোর্ডের ব্যয় নির্বাহের পর বোর্ডের তহবিলে উদ্বৃত্ত অর্থ থাকিলে সরকারের নির্দেশ অনুসারে উহার সম্পূর্ণ বা অংশবিশেষ সরকারের কোষাগারে জমা করিতে হইবে।

ব্যাখ্যা।- এই ধারায় ‘‘তপশিলি ব্যাংক’’ বলিতে Bangladesh Bank Order, 1972 (P.O. No. 127 of 1972) এর article 2(j) তে সংজ্ঞায়িত ‘‘Scheduled Bank’’ কে বুঝাইবে।

বাজেট২৩। বোর্ড প্রতি বৎসর সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরবর্তী অর্থ বৎসরের বার্ষিক বাজেট বিবরণী সরকারের নিকট পেশ করিবে এবং উহাতে উক্ত অর্থ বৎসরে সরকারের নিকট হইতে কি পরিমাণ অর্থ, বোর্ডের তহবিল হইতে ব্যয় নির্বাহকরণ সাপেক্ষে, প্রয়োজন হইবে উহার উল্লেখ করিবে।

হিসাব রক্ষণ ও নিরীক্ষা২৪। (১) সরকার কর্তৃক নির্দেশিত পদ্ধতিতে বোর্ড প্রতি অর্থ বৎসরের হিসাব যথাযথভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করিবে এবং হিসাবের বার্ষিক আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত করিবে।

(২) বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অতঃপর মহা হিসাব-নিরীক্ষক বলিয়া অভিহিত, প্রতি বৎসর বোর্ডের হিসাব নিরীক্ষা করিবেন এবং নিরীক্ষা প্রতিবেদনের একটি করিয়া অনুলিপি সরকার ও বোর্ডের নিকট প্রেরণ করিবেন।

(৩) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত নিরীক্ষা ছাড়াও Bangladesh Chartered Accountants Order, 1973 (P.O. No. 2 of 1973) এর Article 2(1)(b) এ সংজ্ঞায়িত কোনো “chartered accountant’’ দ্বারা বোর্ডের হিসাব নিরীক্ষা করা যাইবে এবং এতদুদ্দেশ্যে বোর্ড এক বা একাধিক “chartered accountant” নিয়োগ করিতে পারিবে এবং এইরূপ নিয়োগকৃত “chartered accountant” সরকার কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত হারে পারিতোষিক প্রাপ্য হইবেন।

(৪) বোর্ডের হিসাব নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে মহা হিসাব-নিরীক্ষক কিংবা তাহার নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি বা উপ-ধারা (৩) এর অধীন নিয়োগকৃত chartered accountant বোর্ডের সকল রেকর্ড, দলিলাদি, বার্ষিক ব্যালেন্স সিট, নগদ বা ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, জামানত, ভাণ্ডার বা অন্যবিধ সম্পত্তি, ইত্যাদি পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পারিবেন এবং চেয়ারম্যান, সদস্য বা বোর্ডের যে কোনো সদস্য ও কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবেন।

সপ্তম অধ্যায়

অপরাধ, দণ্ড এবং বিচার

অনুমতি ব্যতিরেকে ইয়ার্ড স্থাপন করিবার দণ্ড২৫। কোন ব্যক্তি সরকারের অনুমতি ব্যতিরেকে কোন ইয়ার্ড স্থাপন করিলে তিনি অনধিক ২ (দুই) বৎসরের কারাদণ্ড বা অন্যূন ১০ (দশ) লক্ষ টাকা হইতে অনধিক ৩০ (ত্রিশ) লক্ষ টাকার অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

অনাপত্তি সনদ ব্যতিরেকে পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণের উদ্দেশ্যে জাহাজ আমদানি বা স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করিবার দণ্ড২৬। কোন ব্যক্তি বোর্ডের নিকট হইতে অনাপত্তি সনদ গ্রহণ ব্যতিরেকে পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণের উদ্দেশ্যে জাহাজ আমদানি বা স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করিলে তিনি অনধিক ২ (দুই)

বৎসরের কারাদণ্ড বা অন্যূন ১০ (দশ) লক্ষ টাকা হইতে অনধিক ৩০ (ত্রিশ) লক্ষ টাকার অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

ছাড়পত্র ব্যতিরেকে জাহাজ সৈকতায়ন ও পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ করিবার দণ্ড২৭। কোন ব্যক্তি পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণের উদ্দেশ্যে আমদানিকৃত বা স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত কোন জাহাজ বোর্ডের ছাড়পত্র ব্যতিরেকে সৈকতায়ন করিলে বা উহা পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ বা আনুষঙ্গিক কার্যাবলি সম্পাদন করিলে তিনি অনধিক ২ (দুই) বৎসরের কারাদণ্ড বা অন্যূন ১০ (দশ) লক্ষ টাকা হইতে অনধিক ৩০ (ত্রিশ) লক্ষ টাকার অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

জাল সার্টিফিকেট বা কাগজপত্র উপস্থাপন বা দাখিল করিবার দণ্ড২৮। কোন ব্যক্তি ইয়ার্ড স্থাপনের অনুমতি গ্রহণ বা পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণের উদ্দেশ্যে জাহাজ আমদানি এবং স্থানীয়ভাবে সংগ্রহের জন্য অনাপত্তি সনদ গ্রহণ, জাহাজ পরিদর্শন, সৈকতায়ন বা পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণের ছাড়পত্র গ্রহণ বা পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণের কোন পর্যায়ে বোর্ড বা তদকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মচারীর নিকট অসৎ উদ্দেশ্যে জাল সার্টিফিকেট বা কাগজপত্র উপস্থাপন বা দাখিল করিলে তিনি অন্যূন ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা হইতে অনধিক ২০ (ত্রিশ) লক্ষ টাকার অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

জোনের বাইরে কোন ইয়ার্ড নির্মাণ বা পরিচালনা করিবার দণ্ড২৯। কোন ব্যক্তি জোনের বাইরে জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণের উদ্দেশ্যে কোন ইয়ার্ড নির্মাণ বা পরিচালনা করিলে তিনি অনধিক ২ (দুই) বৎসরের কারাদণ্ড বা অন্যূন ১০ (দশ) লক্ষ টাকা হইতে অনধিক ৩০ (ত্রিশ) লক্ষ টাকার অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

বোর্ডের আদেশ, ইত্যাদি লঙ্ঘনের দণ্ড৩০। কোন ব্যক্তি বোর্ড কর্তৃক এই আইনের অধীন প্রদত্ত কোন আদেশ বা নির্দেশনা লঙ্ঘন করিলে তিনি ৬ (ছয়) মাসের কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ (দশ) লক্ষ টাকার অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

দ্বিতীয়বার বা পৌনঃপুনিক অপরাধ সংঘটনের দণ্ড৩১। কোন ব্যক্তি কর্তৃক একই অপরাধ দ্বিতীয়বার বা পৌনঃপুনিক সংঘটিত হইলে তিনি পরবর্তী প্রতিটি অপরাধের জন্য প্রথম অপরাধের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য দণ্ডের দ্বিগুণ পরিমাণ দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

অনুমতি বাতিল এবং মালামাল আটক৩২। (১) এই আইনে বর্ণিত অপরাধে কোন ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হইলে বোর্ড সংশ্লিষ্ট ইয়ার্ডের অনুমতি সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে স্থগিত বা বাতিল করিতে পারিবে।

(২) এই আইনে বর্ণিত অপরাধে কোন ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হইলে আদালত সংশ্লিষ্ট ইয়ার্ড, জাহাজ ও উহার মালামাল বাজেয়াপ্ত করিতে পারিবে।

আটক করিবার ক্ষমতা৩৩। কোন ব্যক্তি এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সংঘটন বা সংঘটনের উদ্যোগ গ্রহণ করিলে বোর্ড তাহার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করিবার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ইয়ার্ড, জাহাজ ও উহার মালামাল আটক করিতে পারিবে।

অপরাধের বিচার, জামিনযোগ্যতা, অ-আমলযোগ্যতা ও আপসযোগ্যতা৩৪। (১) আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধসমূহ প্রথম শ্রেণির জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক বিচার্য হইবে।

(২) এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধসমূহ জামিনযোগ্য (bailable), অ-আমলযোগ্য (non-cognizable) ও আপসযোগ্য (compoundable) হইবে।

(৩) এই আইনের অধীন সংঘটিত কোন অপরাধের বিচার সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হইবে।

(৪) ফৌজদারি কার্যবিধিতে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন কোন ব্যক্তির উপর অর্থদণ্ড আরোপের ক্ষেত্রে আদালতের এই আইনে উল্লিখিত যে কোন পরিমাণ অর্থদণ্ড আরোপ করিবার ক্ষমতা থাকিবে।

ব্যাখ্যা।- এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, –

(১) ‘‘জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট’’ অর্থ ফৌজদারি কার্যবিধির section 11 এ বর্ণিত ‘Judicial Magistrate’;

(২) ‘‘মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট’’ অর্থ ফৌজদারি কার্যবিধির section 18 এ বর্ণিত ‘Metropolitan Magistrate’ ।

কোম্পানি কর্তৃক অপরাধ সংঘটন৩৫। (১) এই আইনের অধীন কোন অপরাধ কোন কোম্পানি কর্তৃক সংঘটিত হইয়া থাকিলে উক্তরূপ অপরাধের সহিত প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা রহিয়াছে কোম্পানির এইরূপ মালিক, পরিচালক, ম্যানেজার, সচিব বা অন্য কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী বা প্রতিনিধি উক্ত অপরাধ সংঘটন করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন, যদি না তিনি প্রমাণ করিতে সক্ষম হন যে, উক্ত অপরাধ তাহার অজ্ঞাতসারে সংঘটিত হইয়াছে অথবা উক্ত অপরাধ রোধ করিবার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছেন।

ব্যাখ্যা।- এই ধারায়-

(ক) ‘‘কোম্পানি’’ বলিতে কোন সংবিধিবদ্ধ সংস্থা, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, অংশীদারী কারবার, সমিতি বা এক বা একাধিক ব্যক্তির সমন্বয়ে গঠিত সংগঠনও অন্তর্ভুক্ত হইবে; এবং

(খ) ‘‘পরিচালক’’ বলিতে উহার কোন অংশীদার বা পরিচালনা বোর্ড, যে নামেই অভিহিত হউক, এর সদস্যকেও বুঝাইবে।

(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কোম্পানি আইনগত সত্ত্বা হইলে, উক্ত উপ-ধারায় উল্লিখিত ব্যক্তিকে অভিযুক্ত ও দোষী সাব্যস্ত করা ছাড়াও উক্ত কোম্পানিকে পৃথকভাবে এই কার্য-ধারায় অভিযুক্ত ও দোষী সাব্যস্ত করা যাইবে, তবে উহার উপর সংশ্লিষ্ট বিধান অনুসারে শুধু অর্থ দন্ড আরোপ করা যাইবে।

ফৌজদারি কার্যবিধির প্রয়োগ৩৬। (১) এই আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, এই আইনে বর্ণিত যে কোন অপরাধের তদন্ত, বিচার ও আপিল, এবং আটক ও আনুষঙ্গিক সকল বিষয়ে ফৌজদারি কার্যবিধি প্রযোজ্য হইবে।

(২) এই আইনের অধীন মহাপরিচালক বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মচারীর রিপোর্টের ভিত্তিতে সূচিত মামলা ফৌজদারি কার্যবিধির অধীন পুলিশ রিপোর্টের ভিত্তিতে সূচিত মামলা বলিয়া গণ্য হইবে।

অপরাধ বিচারার্থ গ্রহণ৩৭। বোর্ড বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মচারীর লিখিত অভিযোগ ব্যতীত কোন আদালত এই আইনের অধীন কোন মামলা বিচারার্থে আমলে গ্রহণ করিবে না।

অষ্টম অধ্যায়

বিবিধ

ওয়ান স্টপ সার্ভিস৩৮। জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ সংক্রান্ত প্রশাসনিক কার্যাদি যথাযথভাবে এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করিবার লক্ষ্যে বোর্ড, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, আন্তঃমন্ত্রণালয় ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু করিবে।

জরুরি ভিত্তিতে জাহাজ সৈকতায়ন সম্পর্কিত বিশেষ বিধান৩৯। (১) দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায়, নিরাপত্তার স্বার্থে, জরুরি ভিত্তিতে জাহাজ সৈকতায়ন করিবার প্রয়োজন হইলে স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি গ্রহণ করিয়া জাহাজ সৈকতায়ন করা যাইবে।

(২) উপ-ধারা (১) অনুযায়ী জরুরি ভিত্তিতে জাহাজ সৈকতায়ন করা হইলে বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে মহাপরিচালক কর্তৃক বোর্ডকে অবহিত করিতে হইবে।

ব্যাখ্যা।- এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, ‘‘স্থানীয় প্রশাসন’’ বলিতে সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসক বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মচারীকে বুঝাইবে।

ইয়ার্ড কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রতিবেদন দাখিল৪০। (১) প্রত্যেক ইয়ার্ড কর্তৃপক্ষ প্রতি বৎসরে উহার সম্পাদিত কার্যাবলির বিবরণ সংবলিত একটি প্রতিবেদন পরবর্তী বৎসরের ৩১শে মার্চের মধ্যে বোর্ডের নিকট দাখিল করিবে।

(২) বোর্ড, প্রয়োজনে, কোন ইয়ার্ড কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে যে কোন সময় উহার যে কোন বিষয়ের উপর বিবরণী, রিটার্ন ও প্রতিবেদন বা যে কোন তথ্য তলব করিতে পারিবে এবং ইয়ার্ড কর্তৃপক্ষ উহা বোর্ডের নিকট সরবরাহ করিতে বাধ্য থাকিবে।

কমিটি৪১। বোর্ড এই আইনের অধীন উহার কোন ক্ষমতা প্রয়োগ বা কোন কার্য সম্পাদনের বিষয়ে উহাকে সহায়তা করিবার উদ্দেশ্যে তদকর্তৃক নির্ধারিত সীমা ও শর্ত সাপেক্ষে বোর্ডের কোন সদস্য, বোর্ডের কর্মকর্তা এবং, প্রয়োজনে, কোন বিশেষজ্ঞ সমন্বয়ে এক বা একাধিক কমিটি গঠন করিতে পারিবে।

ক্ষমতা অর্পণ৪২। বোর্ড, উহার কোন ক্ষমতা, লিখিত আদেশ দ্বারা, চেয়ারম্যান, কোন সদস্য, কোন কর্মকর্তা, কমিটি বা কোন ব্যক্তিকে অর্পণ করিতে পারিবে।

জনসেবক৪৩। সরকার কর্তৃক মনোনীত সদস্য ও অন্যান্য কর্মচারী, এই আইনের অধীন দায়িত্ব পালনকালে Penal Code, 1860 (Act No. XLV of 1860) এর section 21 এ উল্লিখিত Public Servant বলিয়া গণ্য হইবে।

বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা৪৪। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।

(২) এই আইনের অধীন বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত, Ship Breaking and Ship Recycling Rules-2011, অতঃপর উক্ত Rules বলিয়া অভিহিত, এই আইনের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, প্রযোজ্য হইবে।

(৩) উক্ত Rules এর অধীন দায়েরকৃত কোন মামলা এবং গৃহীত বা সূচিত যে কোন কার্যক্রম অনিষ্পন্ন থাকিলে উহা এমনভাবে নিষ্পন্ন হইবে যেন এই আইন প্রণীত হয় নাই।

প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা৪৫। ধারা ১৪ এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে বোর্ড, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে এবং সরকারি গেজেটে প্রকাশিত প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইন বা তদ্‌ধীন প্রণীত বিধির সহিত সামঞ্জপূর্ণ প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে।

ইংরেজিতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ৪৬। (১) এই আইন প্রবর্তনের পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের বাংলা পাঠের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিতে পারিবে।

(২) বাংলা পাঠ ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।